এক গ্রামের নাম ছিল নূরপুর। এই গ্রামে থাকতো এক ছেলে— নাম তার হুদা। সে খুব সাধারণ ছেলে, কিন্তু মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতোঃ “আমার জীবনের সোজা পথ কোনটা?” সে নামাজ পড়তো, কোরআন পড়তো…
তবুও মনে হতো, সে যেন অন্ধকারে হাঁটছে।
একদিন এক বয়োবৃদ্ধ আলেমের কাছে গিয়ে সে প্রশ্ন করল: হুজুর, আমি প্রতিদিন নামাজে বলি: “ইহদিনাস-সিরাতাল মুস্তাকিম” (হে আল্লাহ! আমাদের সোজা পথ দেখাও) কিন্তু আমি বুঝি না, এই সোজা পথটা আসলে কী?
বৃদ্ধ হেসে বললেন: হুদা, তুই যে প্রতিদিন এই দোয়া করিস, এটাই প্রমাণ করে, তুই সঠিক পথ খুঁজছিস।
সোজা পথ হলো,
🔹 যে পথে আল্লাহর সন্তুষ্টি আছে,
🔹 যে পথে নবীজীর অনুসরণ আছে,
🔹 যে পথে দুনিয়ার লোভ কম, আর আখিরাতের চিন্তা বেশি।
তারপর তিনি বললেন:
— “সূরা ফাতিহা হলো এক মানচিত্র।”
- “আলহামদু লিল্লাহ…” মনে করায়, সব প্রশংসা শুধু আল্লাহর।
- “ইয়্যাকা নাঅবুদু…” শেখায়, শুধু আল্লাহর দাস হও।
- “ইহদিনাস-সিরাতাল মুস্তাকিম…” শেখায়, সবসময় পথ চাও, পথভ্রষ্ট হয়ো না।
হুদা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল: তাহলে আমি কীভাবে জানব, আমি সোজা পথে আছি কিনা?
হুজুর বললেন, তিনটা জিনিস পরীক্ষা করঃ
- তুই কি আল্লাহকে ভয় করিস, তবুও ভালোবাসিস?
- তুই কি গোপনে ভালো কাজ করিস, লোক দেখানোর জন্য না?
- তুই কি যখন ভুল করিস, তখন আল্লাহর কাছে ফিরে আসিস?
যদি এই তিনটি থাকে, তাহলে ইনশাআল্লাহ, তুই সোজা পথেই আছিস।
সেদিন হুদা প্রথমবারের মতো সূরা ফাতিহাকে “দিল দিয়ে” বুঝলো।
সে বুঝে গেল—প্রতিদিন নামাজে সূরা ফাতিহা পড়া মানে, আল্লাহর সাথে প্রতিদিনের এক নতুন চুক্তি। সে দিনই সে তার জীবনের লক্ষ্য স্থির করল, “আমি শুধু আল্লাহর হবো, এবং তাঁর দেখানো পথেই হাঁটবো”।
গল্প থেকে শেখার বিষয়:
- সূরা ফাতিহা শুধুই পড়া নয়, বুঝে চলা দরকার
- সোজা পথ মানে নবীদের, সিদ্দিকদের ও সৎ লোকদের পথ
- জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তে আল্লাহর দয়া ও দিকনির্দেশনার প্রয়োজন
